তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আরও চার মামলায় দণ্ড বহাল রয়েছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করলেও তার বিরুদ্ধে থাকা অসংখ্য মামলার কারণে তিনি নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হন। সবশেষ রোববার (১ ডিসেম্বর) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় তিনি খালাস পেলেও তার বিরুদ্ধে আরও চার মামলায় দণ্ড বহাল রয়েছে।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থা জারির পর তারেক রহমান গ্রেফতার হন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সপরিবারে দেশ ছাড়েন এবং লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে যায়। এ সময় তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং কয়েকটি মামলার রায় তার বিরুদ্ধে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মোট ৮৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৯টি মামলায় তিনি খালাস বা অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে ৫টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বাকি মামলাগুলো বিচারাধীন। বিএনপির দাবি, বাকি চার দণ্ডপ্রাপ্ত মামলায়ও ন্যায়বিচার পাবেন তারেক রহমান।

১. জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা

২০০৮ সালে দুদকের দায়ের করা এ মামলায় অভিযোগ ছিল, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। মামলায় তারেক রহমানসহ ছয় আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন।

২. জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ মামলা

২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। অভিযোগ ছিল, তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। একই মামলায় তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

৩. মানিলন্ডারিং মামলা

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে দায়ের হওয়া এ মামলায় ২০১৩ সালে তিনি বিচারিক আদালতে খালাস পান। তবে দুদকের আপিলের পর ২০১৬ সালে হাইকোর্ট তার খালাসের রায় বাতিল করে তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন।

৪. মানহানির মামলা

২০১৪ সালে লন্ডনে এক সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে "রাজাকার ও পাকবন্ধু" বলে মন্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে নড়াইলে একটি মানহানির মামলা হয়। মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তাকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

বিএনপি নেতারা আশাবাদী যে, তারেক রহমান বাকি মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার পাবেন। তাদের মতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো করা হয়েছে।

তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকেই দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা আপাতত অনিশ্চিত।